Sunday, December 6, 2015

ঢাকার যানজট / যানজটের ঢাকাঃ অতীত, বাস্তবতা ও একটি কল্পিত ভাবনা


সমস্যার ভারে জর্জরিত ঢাকা শহরের একটি সহনীয় এবং বহনীয় ভবিষ্যৎ চিন্তা করা কি সম্ভব? এ রকম একটি ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে হলে সবচেয়ে আগে যেটা নিয়ে ভাবতে হবে তা হলো ঢাকার যানজট। নগরজীবন নিয়ে যে কোন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ঢাকাবাসীর হাহাকার যানজট নিয়ে। ঢাকার যানজট শুধু রাস্তার সমস্যা নয়, বরং এটি অনেকগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সমস্যার সামগ্রিক ফল। ২০০৮ সালে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক জরিপে ঢাকাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নোংরা শহরের মধ্যে দ্বিতীয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই জরিপে ঢাকার অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে, প্রতিদিন রাস্তার যানবাহন থেকে যে বিষবাষ্প বেরুচ্ছে, তা ঢাকাকে বাসযোগ্যতার মাপকাঠিতে অনেক নিচে নামিয়ে এনেছে। আসলে যানজট শুধু বিভিন্ন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুই নয়, এটি একইসঙ্গে সামাজিক ও অর্থনেতিক নানা সমস্যাও তৈরি করছে। নগরবাসী মাত্রেই জানেন, তীব্র যানজটের ফলে ঢাকার বাসযোগ্যতা এবং পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগের সম্ভাবনা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তো বটেই, এমনকি অর্থনীতিবিদরাও প্রায়ই ভুলে যান যে, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে আসার আগে একটি শহরের বাসযোগ্যতাকে প্রথমেই মূল্যায়ন করেন।

প্রশ্ন হল, ঢাকার যানজট সমস্যার সমাধানে বাধা কোথায়? এই সময়ের তীব্র যানজট পরিস্থিতিকে শুধুমাত্র নগরায়ন অথবা সড়ক প্রকৌশলের সমস্যা ধরে নিলে যানজটের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক এবং সামাজিক উৎসগুলোকে সম্পূর্ণ ভূল বোঝা হবে। যানজট সমস্যার সমাধানের জন্য সমাজের বিভিন্ন দিককে দেখতে হবে ৩৬০ ডিগ্রিতে। মধ্যবিত্তের নগর পরিবেশ নিয়ে প্রচলিত ভাবনাগুলো কী, সেটা প্রথমে বুঝতে হবে। মধ্যবিত্তের গতানুগতিক ধারণায় ঘর বা অফিসের বাইরে যাওয়া মানেই বিভিন্ন ধরনের বাস্তব ও কল্পিত যন্ত্রণার সঙ্গে যুদ্ধ: ছিনতাইকারীর হুমকি, ট্রাকের নিচে পড়ার আতঙ্ক, দূষিতবাতাসের ভয় অথবা চাঁদাবাজির শিকার হবার সম্ভাবনা। মধ্যবিত্তের কাছে বাইরের জগৎটা প্রায় পুরোপুরি নেতিবাচক। এতোটাই নেতিবাচক যে, সেটা যতো এড়ানো যায়, ততোই যেন ভাল!

এ ধরনের নগরবিরোধী ধারণার প্রতিক্রিয়া হয় দু ধরনের । প্রথমত, প্রয়োজন ছাড়া ঘর এবং কর্মস্থলের বাইরে যেতে মধ্যবিত্তের মধ্যে অনীহা দেখা যায়। এই অনীহাই আবার ঢাকা শহরে সুস্থ ও সুন্দর নগরজীবন গড়ে না ওঠার পেছনে অনেকটাই দায়ী। অথচ যে কোন নগরবিশেষজ্ঞের দৃষ্টিতে নাগরিক চত্বর এবং রাস্তা হলো একটি বাসযোগ্য ও স্বাস্থ্যকর শহরের মৌলিক উপাদান।

দ্বিতীয়ত, ঘরের বাইরে যেতে অনীহার ফলে শহরবাসী এক ধরনের নগরবিরোধী মনস্তত্বেও শিকার হয় নিজের অজান্তেই। রাস্তায় যত্রতত্র থুথু ফেলা, খোলা নালায় ঘরের আবর্জনা ছুঁড়ে ফেলা, নিজের বাসার বাইরে পরিবেশের কী হচ্ছে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র না ভাবা, নগর পরিবেশের প্রতি সহমর্মিতার অভাব, ভূমি দখলের নিরন্তর চেষ্টা– এ ধরনের যাবতীয় অপব্যবহার মূলত নগরবিরোধী মনস্তত্বেরই প্রতিফলন। এর সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হল- এই ধরনের অপচেতনা দেশের রাজনৈতিক এবং নীতিমালা প্রণয়ন মানসিকতায়ও জাল বিস্তার করে। রাজনৈতিক সরকার যখন একপাক্ষিকভাবে গবেষণা ছাড়াই শুধুমাত্র ফ্লাইওভার নিয়ে চিন্তা করে অথবা ‘মাস্টারপ্লান’ কেন্দ্রিক পরিকল্পনায় সীমাবদ্ধ থাকে; তখন তা হয় নগর সমস্যার সামাজিক ব্যপ্তি না বোঝারই ফসল। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, এসব কিছুর সঙ্গে যানজটের সম্পর্ক কী? যদি ঘরের বাইরে যাওয়াটা হয় এক ধরনের সামাজিক যন্ত্রণা, তাহলে মধ্যবিত্তের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হবে বাইরের জনপরিবেশে এক ধরনের ব্যক্তিগত স্থান বা ‘বাবল’ তৈরি করা। ওই ‘ব্যক্তিগত স্থান’ হলো গাড়ি, ঘর বা অফিসের বাইরে মধ্যবিত্তের আশ্রয়। মধ্যবিত্তের চেতনায় গাড়ির দুটো ফসল: একদিকে গাড়ি এক ধরনের আরামদায়ক নিরাপত্তার ধারণা দেয় এবং অন্যদিকে গাড়ি হলো সামাজিক সম্মানের সবচেয়ে ফলোৎপাদক প্রতীক। ঢাকা শহরে এখন প্রতিদিন আনুমানিক ১৮০টি নতুন নিবন্ধিত গাড়ি রাস্তায় নামছে। এর অর্থ হচ্ছে বছরে ৪০ হাজারেরও বেশি নতুন গাড়ি যোগ হচ্ছে ঢাকার রাস্তায়। অথচ রাস্তার দৈর্ঘ্য বাড়ছে না।

যখন শহরে একটি চলমান জনপরিবহন ব্যবস্থার অভাব থাকে, তখন যার সামর্থ্য আছে তিনি গাড়ি কিনবেন অথবা কেনার স্বপ্ন দেখবেন। এই ধরনের মানসিকতার ফলাফল কেমন হতে পারে? ধানমণ্ডির একটি অভিজাত স্কুলের কথা ভাবুন। যদি ওই স্কুলে ৩০০ ছাত্রছাত্রী থাকে, তাহলে খুব সম্ভবত দেড়শ ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসবে গাড়িতে তাদের ব্যক্তিগত ‘বাহন’ দিয়ে। এর ফলে স্কুল শুরু এবং শেষের সময়ে ধানমণ্ডিতে তীব্র যানজট হওয়াই স্বাভাবিক। তাহলে চিন্তা করুন ধানমণ্ডির স্কুলগুলো কীভাবে শহরের গতি কমিয়ে দিচ্ছে। উল্টো পিঠে এবার ভাবুন, যদি এমন একটি ব্যবস্থা করা হয় যে স্কুলের নিজস্ব পরিবহন এবং নিরাপত্তাকর্মীরা ধানমণ্ডির নির্দিষ্ট কিছু স্থান থেকে সমবেত ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে নিয়ে আসবে এবং স্কুল ছুটির পর বাসায় পৌঁছে দেবে, তাহলে অনেকগুলো গাড়ি রাস্তা থেকে উঠে যাচ্ছে।  ভারতের মুম্বাই আমাদের প্রতিবেশী শহর, যার জনসংখ্যা আর সামাজিক পরিস্থিতি ঢাকার মতোই। সেই মুম্বাইয়ের স্কুল পরিবহন ব্যবস্থা যদি তাদের নগর পরিকল্পনার অংশ হয়ে থাকে, তাহলে আমরা কেন একই ব্যবস্থা ঢাকায় করতে পারছি না?

ঢাকার যানজট সমস্যার সমাধান করতে হলে মধ্যবিত্তের নিরাপত্তা এবং সামাজিক সম্মানবিষয়ক মনস্তত্বের বিকল্প তৈরি করতে হবে। এটা সম্ভব একটি বিকল্প গ্রহণযোগ্য জনপরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে। কলাম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার কথা ধরুন। দক্ষিণ আমেরিকার এই অপরাধপ্রবণ শ্রেণীবিভক্ত শহর নব্বই দশকের শেষ দিকে তার নগর পরিবেশের আমূল পরিবর্তন করেছে ট্রান্সমিলেনিও নামে একটি শহরব্যাপী ও টেকসই জনপরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে। সেখানে লালরঙের বাসগুলো শুধু শহরের চলাচল ব্যবস্থাকেই দক্ষ করে নি, বিভিন্ন অর্থনৈতিক শ্রেণীকে একসাথে এনে শহরের সামাজিক ভারসাম্যকে করেছে শক্ত। একইসঙ্গে কমিয়েছে অপরাধ প্রবণতাও।

যেহেতু মধ্যবিত্তের চেতনায় ঢাকার নগর পরিবেশ অনিরাপদ, সমকালীন ঢাকায় হাঁটার সংস্কৃতি নেই বললেই চলে। সকালে স্বাস্থ্য রক্ষার হাঁটা এবং দোকানে যাবার হাঁটা একটা শহরকে পথিকবান্ধব করে না। যে কোন নগরবিদের দৃষ্টিতে একটি চলমান শহরের পরিচিতি নির্ভর করে তার মানসম্পন্ন ফুটপাতের ওপর। ঢাকার ফুটপাত সংস্কৃতি হারিয়ে গেছে রাজনৈতিক মাফিয়ার স্থানীয় মাস্তানদের সড়ক-বাণিজ্যের ভেতরে। পথিকবান্ধব নাগরিক সংস্কৃতি তৈরি করতে হলে ফুটপাতের কোন বিকল্প নেই। দোকান মালিকদের যদি বোঝানো যায় যে পরিস্কার ফুটপাত মানে আরো মধ্যবিত্ত ক্রেতা। তখন এ ক্রেতারাই তাদের ফুটপাতের অবৈতনিক রক্ষক হিসেবে কাজ করবে। লাইসেন্সধারী হকারদের শহরের কিছু স্থানে স্বল্পমূল্যেও বাজারব্যবস্থার মাধ্যমে পুর্নবাসিত করা সম্ভব। অবমুক্ত ফুটপাত শুধু হাঁটার সংস্কৃতিকেই উৎসাহিত করবে না, একটি নগরে সবুজ অর্থনীতি তৈরিতেও সাহায্য করবে। কারণ কম গাড়ি মানে কার্বনমুক্ত অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়া।

এভাবে চিন্তা করলে আমরা যানজট সমস্যার সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। কিন্তু বাস্তবতা হলো ঢাকার যানজটের সামগ্রিক সমস্যার সমাধান শুধুমাত্র নগর পরিকল্পনা বা যানবাহন প্রকৌশলের মাধ্যমে সম্ভব নয়। কারণ যানজট শুধু রাস্তার সমস্যা নয়, এটা এক হিসেবে আমাদের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং নাগরিক দুর্ব্যবহারেরও ফসল। এ কারণে পাঁচ ধরনের চালককে এগিয়ে আসতে হবে যানজট সমস্যার একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের লক্ষ্যে। এরা হলেন: রাজনৈতিক সরকার, পরিকল্পনাবিদ/সড়ক প্রকৌশলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম। এ পাঁচ চালকের কাজের প্রকৃতি ভিন্ন, কিন্তু লক্ষ্য অভিন্ন।

রাজনৈতিক সরকার:
ক. রাজনৈতিক সরকারকে দলীয় স্বার্থের ওপরে উঠে কিছু নীতিমালাকে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তার সাথে বাস্তবায়িত করতে হবে।

প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষার বিকেন্দ্রীকরণ:
১. ঢাকাকে ভারমুক্ত করতে হলে প্রশাসনিক কিছু দফতরকে অন্য শহরে নিয়ে যেতে হবে। এর ফলে বেসরকারি খাতেরও বিকেন্দ্রীকরণ হবে।
২. অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণ করতে বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পকে ঢাকার নগর সীমানার বাইরে নিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, ঢাকায় অন্তত ২০ লাখ তৈরী পোশাক কর্মীর বসবাস রয়েছে।
৩. সারা দেশের মোট ৮২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০টিই ঢাকায়। সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্যান্য শহরে
স্থানান্তরিত করার নীতিমালা তৈরি করতে হবে জরুরিভিত্তিতে।
৪. বিডিআর সদর দফতর এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টকে ঢাকার বাইরে নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হোক এখনই।

জাতীয় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণঃ
ঢাকায় ঘন্টাপ্রতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (৫০+) পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার ২০০ জন মানুষ ভাগ্য অন্বেষণে ঢাকায় ঢুকছে। প্রকৃতপক্ষে কোন উন্নয়ন পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, যদি দেশের জনসংখ্যাকে এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না যায়। এটা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ন্যাশনাল পপুলেশান কাউন্সিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

জাতীয় মহাসড়ক পরিকল্পনাঃ
একটি-দুটি মহাসড়ক চিন্তা না করে, একটি দীর্ঘমেয়াদী মহাসড়ক পরিকল্পনা করার সময় এখনই। সারা দেশকে নিয়ে আসতে হবে একটি মহাসড়ক গ্রিডের আওতায়। এ মহাসড়ক গ্রিডে থাকবে তিন ধরনের নম্বর দেয়া সড়ক: জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ শাহরিক সড়ক। জাতীয় মহাসড়ক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর জনসংখ্যার সুষম বন্টন অর্থনৈতিক প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ওতপ্রোতভাবে নির্ভরশীল।

সাপ্তাহিক গাড়িমুক্ত দিবসঃ
ঢাকায় শহর সীমানার ভেতরে একদিন হোক সাপ্তাহিক গাড়িমুক্ত দিবস। কলম্বিয়ার বেগোটায় গণপরিবহন ব্যবহার এবং কার্বনমুক্ত চেতনায় শহরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে বার্ষিক গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হচ্ছে। ঢাকায় সপ্তাহে একদিন পুরোপুরি রিকশানির্ভর  হতে অসুবিধা কোথায়? সাপ্তাহিক গাড়িমুক্ত দিবস শহরবাসীকে দূষণমুক্ত পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করবে এবং সরকারকে একটি জাতীয় সবুজ নগরায়নের নীতিমালা তৈরিতে সাহায্য করবে।

খ. পরিকল্পনাবিদ, সড়ক ও প্রকৌশলী মহলঃ
১. ঢাকার জন্য একটি উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম দ্রুতগামী জনপরিবহন ব্যবস্থা (বাস, ট্রেন এবং জল টেক্সিকে সমন্বয় করে) পরিকল্পনা করতে হবে। এটা সম্ভব, যদি এর পেছনে প্রত্যয়ী রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকে। পাতাল রেলের সম্ভাবনা জরুরিভিত্তিতে যাচাই করা প্রয়োজন। আমাদের প্রতিবেশী শহর কলকাতায় ১৯৮৫ সালে শুরু হওয়া পাতাল রেলের অভিজ্ঞতা থেকে শেখা যেতে পারে অনেক কিছুই। কলকাতায় প্রতিদিন দমদম কাজী নজরুল লাইনে পাঁচ থেকে আট লাখ লোক যাতায়াত করছে।

২. একটি জাতীয় ফুটপাত নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। হাঁটার সংস্কৃতি তৈরি করতে একটি সুষ্ঠু পথিকবান্ধব ফুটপাতনীতির বিকল্প নেই। নাগরিক পথিক সংস্কৃতি কার্বনমুক্ত অর্থনীতি তৈরিতে অনেকাংশে সাহায্য করবে।

৩. বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের জন্য সড়ক বিভক্তির সৃষ্টিশীল সমাধান প্রয়োজন। এ ধরনের সমাধানের জন্য সড়ক প্রকৌশলী ও নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রচুর মাঠপর্যায়ের গবেষণা করতে হবে। ব্যাংকক, বোগোটা এবং ব্রাজিলের কুরুচিবা শহরের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার আছে অনেক কিছু।

৪. পরিকল্পনাবিদ, সড়ক ও প্রকৌশলী মহল ঢাকা শহরের জন্য একটি জনচত্বর (পাবলিক প্লেস) নীতি প্রণয়নে পেশাগত পরামর্শ দিতে পারেন। একটি শহরের পরিচিতি নির্ভর করে তার মানসম্পন্ন জনচত্বরের ওপর।

৫. আঞ্চলিক বাসস্টেশনগুলোকে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সীমান্তে সরিয়ে নিতে হবে।

৬. সরকারকে একচেটিয়া দোষারোপ না করে পরিকল্পনাবিদ, সড়ক ও প্রকৌশলী মহল বরং তাদের সুচিন্তিত মতামত জানাতে পারেন যে, ঢাকায় কী কী করা সম্ভব।

গ.প্রশাসনিক মহল (রাজউক, ডিসিসি)ঃ
১. একটি দক্ষ জনপরিবহন ব্যবস্থা তৈরি করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনিক মহলকে। বোগোটার ট্রান্সমিলেনিও যেমন, তেমনি ঢাকাতেও জনপরিবহন রাজধানীর উন্নয়নের প্রতীক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

২. স্কুলবাস কার্যক্রম নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্রছাত্রী সংগ্রহ কেন্দ্র। সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোকে এ নীতিমালার আওতায় আনতে হবে। বেসরকারি স্কুলগুলো তাদের নিজস্ব বাস কার্যক্রম চালু করলে আংশিক করমুক্তি দেওয়া যেতে পারে।

৩. সাপ্তাহিক গাড়িমুক্ত দিবস প্রতিষ্ঠা করা যায়।

৪. ঢাকাবাসীকে গাড়ি শেয়ার করার ধারণায় উদ্ধুদ্ধ করা দরকার। একই বাসা থেকে যদি তিনজন পেশাজীবী একই কর্মস্থলে যান, তাহলে একেক দিন একেক জনের গাড়িতে যাওয়াটা হবে একটি সুস্থ সংস্কৃতি। এরকম সংস্কৃতির চর্চা যতো বেশি হবে, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ততোই কমবে এবং জ্বালানি তেলের সাশ্রয় হবে।

৫. বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের জন্য সড়ক বিভক্তির নীতিমালা বাস্তবায়িত করার দায়িত্বও প্রশাসনিক মহলেরই।

৬. পথিকবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে জনচত্বর (পাবলিক প্লেস) গড়ে তোলা হবে আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ। সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এ ধরনের স্থানের অন্যতম উদাহরণ।

৭. রিক্সাকে না উঠিয়ে যুগোপযোগী করতে হবে। কম পেশীশক্তিতে আরও গতি এবং যাত্রীর জন্য টেকসই আসন নিশ্চিত হয়– এমন রিকশা প্রকল্পে বিনিয়োগ আহ্বান করা যেতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বে কার্বনমুক্ত শহরের ইচ্ছায় রিকশা হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়। নিউইয়র্ক, কোপেনহেগেন, স্টকহোম এবং অসলোর দিকে তাকালেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

৮. তরুণ প্রজন্মকে পরিবেশ সচেতন করে তুলতে সরকারকে বিনিয়োগ করতে হবে।

ঘ. সুশীল সমাজঃ
১. নগর পরিবেশ সচেতনতা তৈরি করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার দায়িত্ব সুশীল সমাজের। এ থেকেই গড়ে উঠবে নগরকল্যাণ চেতনা এবং পরিবেশ নীতিবোধ। প্রসঙ্গত, বাপা এবং বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট নেটওয়ার্ক এ ব্যাপারে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে।

২. সরকার এবং নগর প্রশাসনের কাছ থেকে অবিরত জনপরিবহন এবং টেকসই নগরায়ন নীতিমালা দাবি করাও সুশীল সমাজের কর্তব্য।

৩. শুধু পরিবেশ সচেতনতাই নয়, পরিবেশ সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনেও নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

ঙ. গণমাধ্যমঃ
১. নাগরিক দায়িত্ব ও পরিবেশ নীতিবোধ তৈরিতে সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে পর্যাপ্ত স্থান ও সময় দিতে হবে।

২. গাড়ি মালিকানার তথাকথিত সামাজিক সম্মানকে নিরুৎসাহিত করতে আন্দোলন গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে গণমাধ্যমকেই।

৩. টেকসই গণপরিবহন ব্যবস্থা একটি নাগরিক অধিকার এবং চলমান শহরের মাপকাঠি। এটি নগর প্রশাসন এবং সরকারকে অবিরত জানানোর জন্য গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে।

৪. রাস্তাঘাটের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এক ধরনের নাগরিক মূল্যবোধ। এটা শহরবাসীকে বোঝাতে হবে গণমাধ্যমের শক্তি দিয়ে।

৫. হাঁটার সংস্কৃতি তৈরি করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে পরিবেশ নীতিবোধ
তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে গণমাধ্যমকেই।

৬. নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রতিষ্ঠিত করতে নগর প্রশাসনের দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমকে নিতে হবে দৃঢ় ভূমিকা।

সর্বোপরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তহীনতা এবং প্রশাসনিক অদক্ষতার পাশাপাশি যানজটের সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসগুলোকে বিশ্লেষণ করতে হবে একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য। বর্তমানে অনেক গবেষণা হচ্ছে- কেন কিছু জায়গায় উন্নয়ন হয় আবার কোথাও হচ্ছে না। কিছু-কিছু গবেষক আজকাল দাবি করছেন যে, উন্নয়ন এক ধরনের মনোবৃত্তি। তার মানে হলো মানুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক গড়ন তাদের সার্বিক উন্নয়নের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ঢাকা শহরে আমরা সবাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই। অথচ প্রায়ই আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে শ্রদ্ধাশীল নই। সামান্য প্রয়োজনে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে যাওয়া, যেখানে-সেখানে গাড়ি রেখে দেওয়া, তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য ছোট রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে আরো দশটি গাড়িকে আটকে দেওয়া, ৩০০ গজ যেতেও রিকশায় উঠে পড়া– এই ধরনের নাগরিক দায়িত্বহীনতাকে কোটি-কোটি টাকার ফ্লাইওভার বা পাতাল রেল দিয়ে ঠিক করা যাবে না। এই ধরনের অপব্যবহার কি আমাদের বাঙালিত্বের মজ্জায়?

ভেনেজুয়েলার লেখক কার্লোস র‌্যাঙ্গেল দাবি করেছেন, দক্ষিণ আমেরিকার গোলমেলে এবং অস্থির সামাজিক পরিস্থিতির কারণ খুঁজে পেতে শুধু ঔপনিবেশিক শোষণকে দায়ী করলে চলবে না। বরং আইবেরিয়ান সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সাথে এ মহাদেশের অনুন্নয়ন ধারার সম্পর্ক দেখতে হবে।

হাইতির ক্রমাগত অনুন্নয়নের ইতিহাস বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মার্কিন লেখক লরেন্স হ্যারিসন দাবি করেছেন, হাইতির কালো জনগোষ্ঠীর ভেতরে জাগতিক উন্নয়নের প্রতি একধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোভাব এবং যে কোন ধরনের পরিকল্পনার প্রতি অবিশ্বাস তাদেরকে দারিদ্র্যের বজ্র আঁটুনির ভেতর আটকে রাখে। এর মানে হলো যে কোন ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যেক মানুষকে তার নিজের ভূমিকায় এবং উন্নতি করার মানসিকতায় বিশ্বাসী হতে হবে।

ঢাকার যানজট নিরসনে নগর প্রশাসন বা সরকারের সদিচ্ছাই যথেষ্ট নয়। নগরবাসীকেও তাদের নাগরিক দায়িত্ব পালনে সচেতন এবং রাস্তার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আমরা হাহাকার করতে পারি যে, ঢাকার মাত্র ৬৭টি সড়ক মোড়ে সিগন্যাল আছে। কিন্তু আমরা ভুলে যাই, শিক্ষিত ব্যবসায়িক কর্মকর্তারা কাওরান বাজারে যেখানে-সেখানে গাড়ি রেখে দেন, তখন সড়কের প্রস্থ কমে গিয়ে তৈরি হয় দুর্বিসহ যানজট। যানজট নিরসনে প্রথাগত নাগরিক ব্যবহারের আমূল পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

কাজেই যানজট নিরসন যেমন একদিকে প্রশাসনিক এবং সড়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব, অন্যদিকে নাগরিক মূল্যবোধহীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধও।

নব্বই দশকের শেষ দিকে বোগোটার মেয়র এনরিকে পেনিয়ালোসা তার শহরের রাস্তাগুলোকে রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক মাফিয়া এবং তাদের পরিবহন ব্যবসার দখল থেকে অবমুক্ত করে গণপরিবহন ব্যবস্থা এবং একটি গণচত্বর নীতিমালার আওতায় এনেছিলেন। এ কারণে রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা তাকে মেয়রের অফিস থেকে বহিস্কারের চেষ্টা চালায়। কিন্তু পেনিয়াসোলার গণমুখী নগরনীতি শুধু তাকে রাজনৈতিকভাবেই টিকিয়ে রাখেনি, তাকে করেছে বোগোটার ইতিহাসের অন্যতম সফল মেয়র। ঢাকার নগর সমস্যা অনেক। কিন্তু পৃথিবীর অনেক শহরের উদাহরণ (মেক্সিকো সিটি, বোগাটা, ব্যাংকক, ব্রাজিলের কুরুচিবা) স্বরূপ বলা যায় ঢাকাকেও অর্থনৈতিকভাবে গতিশীল একটি পরিবেশবান্ধব শহরে পরিণত করা সম্ভব। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, পরিবেশবান্ধব নগর নীতিমালা এবং প্রশাসনিক দক্ষতার সুষম সমন্বয়। যানজটের কাছে আত্মঘাতী সমর্থন নয়, বরং ধরে নিতে হবে এক ধরনের নাগরিক নীতিবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে যানজট নিরসনে সৃষ্টিশীল উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই।

ব্লগ: যা মূলত এক ধরণের অনলাইন জার্নাল!


আমাদের দেশে ব্লগ ও ব্লগার শব্দ দুটি বর্তমানে বেশ আলোচিত, তবে ব্লগ শব্দটির চেয়ে ব্লগার শব্দটিই বেশী আলোচিত। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন ব্লগার বিপথগামী মোল্লাদের দ্বারা হত্যার শিকার হওয়ায় বিষয়টি সারা বিশ্বের মিডিয়ায় বাংলাদেশের একটা নেতিবাচক ভাবমুর্তি তৈরী হচ্ছে। এই দেশে শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষার উপর পাঠদানকারী মাদ্রাসাগুলোতে তো বটেই অন্যান্ন সব মাদ্রাসা শিক্ষাত্রী ও একই শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিদের মানসিকতায় ব্লগার মানেই হলো ধর্মের অবমাননাকারী কিম্বা নাস্তিক। আমার ব্লগ, সচলায়তন, সামহোয়্যারইন ব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ এই চারটি সামাজিক ব্লগই ব্লগারদের নিয়মিত পদচারনায় মুখর। ব্লগ শব্দটি ইংরেজ Blog এর বাংলা প্রতিশব্দ, যা এক ধরণের অনলাইন জার্নাল । ইংরেজি Blog শব্দটি আবার Weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিলান্স সাংবাদিকতার একটা মাধ্যম হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগাররা এটি নিয়মিত আপডেট করেন। নিয়মিত ব্লগ লেখার প্রক্রিয়াকে “ব্লগানো” বলা হয়।

বেশিরভাগ ব্লগই কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ধারাবিবরণী বা খবর জানায়; অন্যগুলো আরেকটু বেশিমাত্রায় ব্যক্তিগত পর্যায়ের অনলাইন দিনপত্রী বা অনলাইন দিনলিপিসমূহ। একটা নিয়মমাফিক ব্লগ লেখা, ছবি, অন্য ব্লগ, ওয়েব পেজ আর এ বিষয়ের অন্য মাধ্যমের লিংকের সমাহার বা সমষ্টি। পাঠকদের মিথষ্ক্রিয়াময় ছাঁচে মন্তব্য করার সুবিধে রাখা বেশিরভাগ ব্লগের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিছু কিছু নো মডারেশন ব্লগে ইচ্ছেমত গালগালিও করা যায়। প্রায় ব্লগই মূলত লেখায় আকীর্ণ, কিছু কিছু আবার জোর দেয় শিল্প (আর্ট ব্লগ), ছবি (ফটোব্লগ), ভিডিও (ভিডিও ব্লগিং), সঙ্গীত (এমপিথ্রিব্লগ) আর অডিওর (পডকাস্টিং) ওপর এবং বাংলা ব্লগে এইসব কিছুর খুব ভাল ভাবে কম্বিনেশন করতে পেরেছে “বিডিনিউজ২৪ব্লগ”। মাইক্রোব্লগিং-ও আরেকধরনের ব্লগিং, ওটায় খুব ছোট ছোট পোস্ট থাকে। ডিসেম্বর, ২০০৭-এর হিসেবে, ব্লগ খোঁজারু ইঞ্জিন টেকনোরাট্টি প্রায় এগারো কোটি বার লাখেরও বেশি ব্লগের হদিশ পেয়েছে।

ব্লগিং জনপ্রিয় হওয়ার আগে, ডিজিটাল গোষ্ঠীগুলোর নানান ধরন ছিলো, ছিলো ইউজনেট (Usenet), ছিলো জিনি(GEnie), বিক্স (BiX)-এর মতো বাণিজ্যিক অনলাইন সার্ভিস, আরো ছিলো পুরনো আমলের কম্পুসার্ভ (CompuServe), ই-মেল লিস্টস আর বুলেটিন বোর্ড সিস্টেমস (বিবিএস)। ১৯৯০-এর দিকে, ইন্টারনেট ফোরাম সফটওয়্যার “থ্রেড”-এর মাধ্যমে কথোপকথন চালানোর ব্যবস্থা শুরু করে। থ্রেড হচ্ছে একটা ভার্চুয়াল “কর্কবোর্ড”-এ বার্তাগুলোর মাঝখানের সাময়িক সংযোগের সমষ্টি।

আধুনিক ব্লগের উৎপত্তি ঘটে অনলাইন দিনপত্রী থেকে, যেখানে লোকেরা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের বিবরণ রাখতেন। এধরনের বেশিরভাগ লোকেরাই নিজেদের বলতেন ডায়েরিস্টস, জার্নালিস্টস অথবা জুমালারস। সোয়ার্থমোর কলেজ-এ ১৯৯৪-এর দিকে পড়ার সময় ব্যক্তিগত ব্লগিং-করিয়ে জাস্টিন হল-কে অন্যতম আদি ব্লগার হিসেবে ধরা হয়, যেমনটা ধরা হয় জেরি পুমেল-কেও। ডেভ উইনার-এর স্ক্রিপ্টিং নিউজ-এরও সবচাইতে পুরনো আর সবচাইতে বেশি দিন ধরে চালু থাকা ওয়েবলগ হিসেবে খ্যাতি আছে।

প্রথম দিককার ব্লগগুলো ছিলো স্রেফ সাধারণ ওয়েবসাইটের হাতে-বানানো উন্নততর উপকরণ। তবে, সময়ের সাথে বিপরীতক্রমে পোস্ট-করা ওয়েব প্রবন্ধগুলো লেখা এবং দেখভাল করা সহজ করার জন্যে বিবর্তিত কৌশলগুলোই প্রকাশ ব্যবস্থাটা বড়সড় একটা জনগোষ্ঠীর কাছে, যারা তেমন প্রযুক্তিদক্ষ নয়, বেশ সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। এতে করেই শেষমেষ আলাদা ধরনের একটা অনলাইন প্রকাশনা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে যেটা আজকাল আমাদের চেনা চেহারার যেরকম ব্লগ সেরকমটা তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু কিছু ব্রাউজার-নির্ভর সফটওয়্যারের ব্যবহার এখন ব্লগের একটা নিতান্তুই সাধারণ ব্যাপার। ব্লগ হোস্ট করার জন্যে আছে নির্ধারিত ব্লগ হোস্টিং সার্ভিস, এছাড়াও ওগুলো ব্লগ সফটওয়্যার কিংবা নিয়মিত ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করেও চালানো যায়। কিছু আদ্যিকালের ব্লগার, যেমন দ্য মিস্যানথ্রোপিক বিচ ১৯৯৭ সালের দিকে যখন ব্লগিং শুরু করে, তারা নিজেদের অনলাইন উপস্থিতির নাম দিয়েছিলো জাইন (zine)। তখনো “ব্লগ” নামের পারিভাষিক শব্দটা আজকালকার সাধারণ ব্যবহারের পর্যায়ে আসে নি।

শুরুটা ধীরগতির হলেও, ব্লগিং দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৯৯ সাল এবং তার পর থেকেই ব্লগ ব্যবহার বাড়তেই থাকে। প্রথম দিককার কিছু ব্লগ হাতিয়ারের প্রায়-সমসাময়িক আবির্ভাব ব্যবহারটা আরো লোকপ্রিয় করে:
• ১৯৯৮ সালে ব্রুস আবেলসন ওপেন ডায়রি নামান, এতে করে হাজারো অনলাইন দিনপত্রী জন্ম নেয়। ওপেন ডায়রির আবিষ্কার হচ্ছে পাঠক মন্তব্য, এটাই ছিলো প্রথম ব্লগ কমিউনিটি যেখানে পাঠকেরা অন্য লেখকের ব্লগ অন্তর্ভুক্তিতে মন্তব্য করতে পারতেন।
• ১৯৯৯-এর মার্চে ব্র্যাড ফিটজপ্যাট্রিক শুরু করেন লাইভ জার্নাল।
• জুলাই, ১৯৯৯-এ এন্ড্রু স্মেলস কোন ওয়েবসাইটে একটা “খবর পাতা” রাখার বিকল্প হিসেবে জন্ম দেন পিটাস.কম-এর, এর পরপরই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯-এ আসে ডায়েরিল্যান্ড, যেখানে ব্যক্তিগত দিনপত্রীমূলক কমিউনিটির ওপর জোর দেওয়া হয়। ইভান উইলিয়ামস এবং মেগ হুরিহান (পাইরা ল্যাবস) ব্লগার.কম চালু করেন অগস্ট, ১৯৯৯-এ এবং গুগল এটা কিনে নেয় ২০০৩-এর ফেব্রুয়ারিতে।

বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অনেক গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কমিউনিটি ব্লগ এমন কি ব্যাক্তিগত ব্লগগুলিও উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখছে।


বাংলা ব্লগের তালিকা:
* আমার ব্লগ
* সামহোয়্যারইন ব্লগ
* প্রথম আলো ব্লগ
* ‍বিডিনিউজ২৪ব্লগ
* সচলায়তন
* নির্মান ব্লগ
* বিজ্ঞানী
* বিডিনিউজ২৪ বাংলা ব্লগ
* নিসর্গ
* টেকটিউনস
* হাতাশি ইনসাইডার
* না বলা কথা
* উত্স সন্ধানে
* …করি বাংলায় চিত্কার…
* ছেঁড়া পাতায় কথামালা
* আসিফ আহমেদ অনীকের বাংলা ব্লগ
* অমি আজাদ
* সসংকোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস
* আমি এবং আমার পৃথিবী
* পুড়ে ছাই ধ্বংসস্তুপ থেকে বেঁচে উঠি পুর্ণবার
* রয়েসয়ে
* নিরিখ বান্ধিলাম দুই নয়নে……
* বিবর্ণ আকাশ এবং আমি….
* ভয়েস অফ বাংলাদেশী ব্লগারস
* এইটা তোমার গান
* প্রাত্যহিক ভ্যাজর ভ্যাজর
* কবিয়াল
* অজ্ঞাতবাস
* ধৃসর গোধুলী
* সাধক শন্কু
* বলো গো
* মোকাবেলা
* খিচুড়ী ব্লগ
* আড্ডা
* ভালবাসা
* হাজার বর্ষা রাত………
* কাকশ্য পরিবেদনা!
* আধুলি জমানোর ম্যাচবক্স
* কীন ব্রীজে গোধুলি এল অন্তরালে কালান্তর ভোর
* দিল কা লাড্ডু
* অনন্ত ন্বপ্ন
* ..খেরোখাতা..
* যাপিত জীবন
* বাংলা ভাষী
* বাংলা ভাষা
* সুহ্রদ সরকার
* সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটুক … নতুন সম্ভাবনার তাগিদে
* সীমাহীন সংলাপ
* যূথচারী
* আলী মাহমেদের ব্লগিং
* মাহবুব সুমন ও তার অগাবগা বচন
* শুভ্র প্রকাশ পালের ব্লগ
* অলস বিকেলের শেষ রোদ
* শেঁকড়ের সন্ধানে
* টকিজ
* খসড়া কবির খসড়া কবিতা
* আমার ভাঙা পথের রাঙা ধূলা
* স্বপ্নলোক
* হিডেন হার্ট
* ত্রসরেণু অরণ্যে
* গ্লোবাল মিডিয়া
* আমাদের কথা -নারী জীবন বাংলা ব্লগ
* New Gaul Order -USA
* Ontorjatra
* আলোকধেনু
* জিকোবাজি
* কাপালিকানা
* আবজাব
* মুক্তাঙ্গন: নির্মাণ ব্লগ
* সোনার বাংলা ব্লগ
* চতুর্মাত্রিক ব্লগ
* নাগরিক ব্লগ
* শব্দনীড় ব্লগ

ইন্ডিয়ান বাংলা ব্লগ:
* স্লোগান দিতে গিয়ে
* আমার কিছু বক্কা
* খোলা জানালা
* মনের পাতা
* ট্রিভিয়াল বাইটস
* ধূসর ফিনিক্স …এবং কোমল গান্ধার
* বিবর্ণ কবিতা
* জীবনানন্দ দাশের কবিতা

আরো কিছু বাংলা কমিউনিটিঃ

বাংলা ফোরাম:
* আমাদের প্রযুক্তি
* প্রজন্ম ফোরাম
* বাংলাকর্ড
* রংমহল

আন্তর্জাতিক বেতারগুলোর বাংলা খবরের পাতা:
* ডয়েচেভেলে জার্মান বেতার
* বিবিসি
* এন.এইচ.কে (জাপান)
* চায়না রেডিও
* রেডিও তেহরান

বাংলা অভিধান:
* সংসদ বাংলা অভিধান
* বাংলা ভাষার অভিধান
* সংসদ বাংলা-English অভিধান

কিছু অনলাইন ম্যাগাজিনঃ
বাংলালাইভ i পত্রিকা http://banglalive.com/ipatrikaa/ipatrikaahome.asp
গুরুচন্ডালী http://guruchandali.com/
নতুন দিগন্ত http://www.natun-diganta.com/
বাংলামাটি http://www.banglamati.net/
বইপাড়া http://www.boipara.com/
কালি ও কলম http://www.kaliokalam.com/
কৌরব http://kaurab.tripod.com/
পড়শী http://www.porshi.com/
পরবাস http://www.parabaas.com/
পালকি http://calcuttans.com/palki/
শতরুপা http://www.shatorupa.com/
মাধুকরী http://www.maadhukari.com/
সাতরং http://www.satrong.org/
আর্টস বিডি নিউজ২৪ http://arts.bdnews24.com/
সাতরং http://www.satrong.org/
বীক্ষণ http://beekkhan.com/
হাজারদুয়ারী http://www.hajarduari.com/
“সৃষ্টি’ – http://www.sristi.co.in/

সুত্র: উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট, হাতাশি ইনসাইডার।

পাকিস্তান শব্দটাই অরুচিকর

ভুল ধারণার উপর জন্ম নেওয়া পাকিস্তান নামক ব্যর্থ রাষ্ট্রটির ঔদ্ধত্য ও মিথ্যাচার কেবল আমাদেরকেই নয়, একাত্তরে তাদের বর্বর ভূমিকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল যে কোনো দেশের নাগরিককেই বিস্মিত করবে তাদের রাষ্ট্রপক্ষীয় নির্লজ্জ বিবৃতি। শুধু রাষ্ট্রপক্ষই নয়, এমনকি সে দেশের ‘জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান’ও রাষ্ট্রীয় সুরে গলা মিলিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায়ে।

পাকিস্তান একটি বিকারগ্রস্ত রাষ্ট্র। মনে পড়ছে মওলানা আবুল কালাম আজাদ ‘পাকিস্তান’এর ধারণাটি ‘অরুচিকর’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল এই যে:

“এক কথা স্বীকার না করে পারছি না যে, পাকিস্তান শব্দটাই আমার কাছে অরুচিকর। এ থেকে মনে হয় পৃথিবীর কতকাংশ শুদ্ধ আর বাকি সব অশুদ্ধ। শুদ্ধ আর অশুদ্ধ বলে এলাকা ভাগ করা ইসলাম-বহির্ভূত; এর সঙ্গে বরং সেই গোঁড়া ব্রাক্ষণ্যের মিল বেশি, যা মানুষ আর দেশকে শুচি আর ম্লেচ্ছে ভাগ করে– এই ভাগাভাগি ইসলামের আদত ভাবকেই নস্যাৎ করে। ইসলামে এ ধরনের ভাগাভাগির কোনো স্থান নেই এবং পয়গম্বরের বাণী হল, ‘খোদা আমার জন্য সারা দুনিয়াকেই মসজিদ বানিয়েছেন।’”

[মওলানা আবুল কালাম আজাদ, ‘ভারত স্বাধীন হলো’; ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান; প্রকাশকাল: ২০১০; পৃ: ১৩৮]

ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির প্রাজ্ঞ পুরুষ মওলানা আজাদ থেকে এই উদ্ধৃতি দেওয়ার মাধ্যমে এটাই পরিষ্কার করে তুলে ধরা হচ্ছে যে, পাকিস্তান জন্ম থেকেই ভুল ও মিথ্যার ক্লেদে বন্দি একটি রাষ্ট্র। এমনকি যে-ইসলামি জিগির তুলে এর জন্ম, সেই ইসলামেরই ধারণার বিপরীতে তার অবস্থান।

পাকিস্তান নামক বর্বর ও অরুচিকর রাষ্ট্রটি সম্পর্কে কথা বলা মানেই ভাষিক রুচি বিসর্জন দিয়ে কথা বলা। কারণ, এটি এতই অসুস্থ ও উন্মাদ এক রাষ্ট্র যার সম্পর্কে খিস্তি ব্যবহার না করে কোনো বাস্তব ধারণা দেওয়া সম্ভব নয়।

১৯৪৭ সালে ভারত-ভাগের পর থেকেই পাকিস্তান এ-অঞ্চলের বাঙালি জনগোষ্ঠী সম্পর্ক অতিশয় হীন ধারণা পোষণ করত। সূচনা থেকেই এই জাতিকে শোষণ ও নির্যাতন  করে এসেছে বাংলাদেশের অভ্যুদয় পর্যন্ত। একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তারা যে অপরাধ করেছে তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। ভিত্তিও, আলোকচিত্র ও তথ্যাকারে তা পৃথিবীর নানান দেশে, নানান ভাষায় সংরক্ষিত আছে জেনেও পাকিস্তান গণহত্যার দায় অস্বীকার করার নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছে সম্প্রতি। এর আগেও তারা বিভিন্ন সময় এ ধরনের কাজ করেছে। আর কেবল এতেই তারা থেমে থাকেনি, এমনকি সভ্য রাষ্ট্রের সব রকম শিষ্টাচার উপেক্ষা করে তারা আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয়েও নাগ গলানোর ধৃষ্টতা দেখিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নিন্দা জানিয়ে। যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি পাকিস্তানের এই দরদ শুধু এটাই প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।

খুনী ও যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানের বিশ্বব্যাপী পরিচিতি অসভ্য ও প্রতিক্রিয়াশীল এক রাষ্ট্র হিসেবে। এটি এমন এক দেশ যেখানে মিলিটারি একাডেমি কাকুলের পাশেই অ্যাবোটাবাদে আশ্রয় পেয়েছিল দুর্ধর্ষ অপরাধী ওসামা বিন লাদেন। অপরাধ ও মৌলবাদের এক উর্বর ভূমি পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে এই অপরাধীকে হত্যাও করেছিল মার্কিন সামরিক বাহিনী। একদিকে নিজের দেশে একজন দাগী আসামিকে আশ্রয়দানের মতো অপরাধ যেমন তারা করেছে, অন্যদিকে বিদেশি সামরিক শক্তিকে অভিযান পরিচালনার সুযোগ দিয়ে নিজেদের সার্বভৌমত্ব বিলুপ্তির মতো অপমানও তারা হজম করেছে। এরকম একটি দেশ কোন অহংকারে আজ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্যের নিন্দা করার সাহস পায়? সুপরিচিত সেই প্রবাদ–চোরের মার বড় গলা–এই দেশটির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। অন্যায়, অবিচার, খুন, দুর্নীতির ক্লেদে নিমজ্জিত পাকিস্তানের কোনো নৈতিক অধিকার নেই বাংলাদেশের ব্যাপারে নাক গলানোর। বাংলাদেশের কাছে পরাজিত এই রাষ্ট্রটি এখন এতটাই নির্লজ্জ ও উদ্ধত ভঙ্গিতে কথা বলছে যেন ওদের পেছনে পরাজয় ও অপমানের কোনো অতীত নেই।

সামরিক প্রধানদের কাছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধানরা কতটা মেরুদণ্ডহীন তার এক প্রমাণ দেখেছিলাম পাকিস্তানেরই ইংরেজি পত্রিকা ডনে ২০১৩ সালের ৫ জুনে প্রকাশিত এক সংবাদে (PM sharif’s convoy stopped to let Army chief pass) যেখানে বলা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরীফের গতিরোধ করা হয়েছিল সামরিক প্রধানের গাড়ির বহর যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। পাকিস্তানের মতো দেশেই কেবল এ ধরনের আত্মমর্যাদাহীন ঘটনা ঘটতে পারে। গোটা রাষ্ট্রটি যে দুর্নীতিগ্রস্ত সামরিক বাহিনীর বুটের তলায় পড়ে আছে তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই।

এ রকম একটি আত্মমর্যাদাহীন বিশ্ববেহায়া দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাতিল করার যে দাবি সম্প্রতি আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির পক্ষ থেকে উঠেছে তা আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ সরকারের আমলে নেওয়া উচিৎ। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা যদি সব ধরনের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করি তাতে মনে হয় না বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। যত দূর জানি, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে আমরা যে-পরিমাণ রফতানি করি, সে দেশ থেকে বরং আমদানি করি অনেক বেশি। অতএব ওরাই বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আর যদি ধরেও নিই যে, আমরাই বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হব, তাহলেও আমাদের সেটাই করা উচিত। একাত্তরে আমরা স্বাধীনতা অর্জনের যে ঝুঁকি নিয়েছিলাম সেই তুলনায় এই ঝুঁকি হবে খুবই সামান্য।

কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আরও একটি যুক্তি হচ্ছে এই যে, এই সম্পর্কের মুখোশে ওরা আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত ষড়যন্ত্র কেবল অব্যাহত রাখছে তা নয়, তাকে আরও সুদূরপ্রসারী করার সুযোগ পাচ্ছে। পাকিস্তানের গর্ভজাত জঙ্গিবৃত্তি, সহিংসতা আর প্রতিক্রিয়াশীল তপরতা এদেশে প্রবেশের পথও উন্মুক্ত থেকে যাবে যদি এই সম্পর্ক ছিন্ন না করা হয়। ভুলে গেলে চলবে না যে, বিশ্বব্যাপী বড় বড় জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও লালনকারী এই পাকিস্তান।

সুতরাং একটি জঙ্গি ও যুদ্ধপরাধী রাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক রাখার প্রয়োজন আমাদের নেই।


Monday, December 6, 2010

Climate change and the poor

Climate change caused by global warming is a hard and bitter reality now. World leaders and activists have risen to the occasion lately; intercontinental level discussions after discussions have been held over the recent years to agree on ways and means to mitigate effect of and adapt to this unwelcome change. But any adequately effective and agreed measure is yet to be on card. The latest Copenhagen conference has also unfortunately experienced more discord than consensus. Meanwhile the scourge is assuming further gravity for the vulnerable.

Carl Pope, executive director of the Sierra Club, one of America's most influential environmental organisations, writes on projection: "The climate models ran and ran, and ran again. Big chunks of Antarctica plunged spectacularly into the sea, while glaciers in the Himalayas quietly withered away, and Kilimanjaro got browner and browner. Finally the scientists concluded their long debate: not only could human activity disrupt and destroy the stability of the world's climate, it was measurably doing so. The rest of us tried not to listen. But we need to" (India Today, Dec 14, 2009).

Yes, we need to, not only listen but act too, now. Because it is already late; we must not allow it to be too late.

Well, global warming is a natural process, but so slow in progression that it never have been anyway significant until late last century when people started to feel the heat to their utter concern. They traced back to find the cause in their own doing: the process has been more human induced than natural following the industrial revolution. And since then there has been no let up in the excessive emission of CFC and other greenhouse gases in the atmosphere. With the increase in population coupled with unabated consumerism this heating up process has only gained momentum for worse over the recent decades. "Nineteen of the world's 20 warmest years have occurred since 1980". 

But for this not all humans are equally responsible, nor all are equally capable of mitigating the scourge themselves. But when this malady is global, the measures to face it also has to be global -- logically the most emitters helping the least emitters in that.

Although the COP15 Copenhagen has been termed by many as failure, there has been some hopeful outcome to note. The Kyoto Protocol, an international initiative to deal with the problem, was adopted in 1997 but the US, the largest greenhouse gas producer, refused to sign it. This time at Copenhagen it has been a US led deal. Under the initiative of US President Barak Obama, China, India, Brazil, South Africa struck it while there has been pledges that rich (industrialised) countries would provide dollar 30 billion over the next three years and dollar 100 billion a year from 2020 to developing countries. The US, however, announced the lowest pledge of contributing dollar 3.6 billion between 2010 and 2012 while Japan would contribute dollar 11 billion and the EU dollar 10.6 billion.

But the deal has no legal binding. There has been an agreement to arrest global temperature rise at 2 degrees Celsius above pre-industrial level by 2050. This implies considerable cut in carbon emission over the next 40 years. But would it be realised under a non-binding accord, many doubt. So reasonably many are not satisfied with the COP15 outcome. However, there are also reasons for Bangladesh to feel a bit otherwise. It has been recognised as one of a few countries most vulnerable to global warming and climate change. At least some fund must be available for it to adopt coping measures. Bangladesh consequently finds some solace in the face of mounting miseries due to climate change ravages.

Poor vulnerable countries, including Bangladesh, have already started to bear the brunt of climate change impact. Bangladesh is more frequently visited by devastating cyclones now than ever before and is set to lose 15 percent of its landmass to the rising sea turning 10 percent of its population climate refugees. Damage to Bangladesh's coastal infrastructure is apprehended to amount upto 12 percent of its GDP by 2010, not to speak of how frightening it would be by 2050. According to one estimate, 65 percent of greater Khulna, 99 percent of Barisal, 100 percent of Patuakhali, 44 percent of Noakhali and 12 percent of Faridpur districts will be inundated.

As a result 13.74 percent of cropped area and about 401,600 hectares of mangrove forest with its unique wildlife will be lost. Crop loss will be in millions of tons. The salinity intrusion upward will entail further production loss in agriculture. The total losses of assets and production in small and cottage industries sector are estimated to be Tk 1078 million and Tk 981.553 billion, respectively, not to speak of other industrial and trading losses.

These losses will lead to increased poverty and decreased food security, increased unemployment and decreased accommodation capacity, pushing society to a jeopardy. Climate change will increase incidence of diseases with addition of new affliction and vectors. Vulnerable poor countries consequently having less withstanding capacity will simply suffer more. They need adequate support -- global support to counter their respective local climate change afflictions.

Well, the problems would vary from region to region, place to place, and local efforts are a must to overcome these. Local experts and administration understand their local problems better. Whatever the source of fund local undertakers are required to utilise that. At the Conference also, while raising demand for support to mitigate climate change impacts by LDCs, there has been suggestions by many for local initiative towards ensuring effective encounter.

Like elsewhere Bangladesh also has a local government system which may take the initiative of implementing or permit other appropriate undertakers to implement special climate change mitigation and adaptation programmes. Such programmes, in fact, shall not be much different from other development projects. So there is understandably not much difficulty in assuming and achieving them. But there is little time left for contemplation. Climate is changing rapidly than thought and its impact is already being felt. This will mount and profoundly affect us and subsequent generations. The only way out is our own challenge to slow the process, to lessen our vulnerability and adapt to changed conditions.

If we are serious and sincere in our pledge to reduce green house gas emission, it would not be very difficult to bring down global mean temperature below 2 degree Celsius above pre-industrial period by the target period or even before.

Locally we can go for greening (afforestation) projects wherever possible. But, sadly enough of late media is very frequently coming up with reports of denudation of plantations by "miscreants having links with people that matter". This speaks of no sincerity, no seriousness attached to speech. There must be very stringent law against deforestation and exemplary action against perpetrators. And we can go for clean energy -- wind power, solar power -- as much possible. However, windmills in coastal belt run the risk of being affected by cyclones and solar panels will not work during the monsoon. But then we can embark upon some solution measures, ways must be found for survival's sake.

As a least developed country we need to develop; the world want us to develop. Thus we cannot curtail our modest industrialisation process but can cut emission, whatever small it is. In that the developed world has to help us with improved, efficient technologies. In our case at the moment the brick kilns appear to be the most emitters. They should be made to refrain from burning fossil fuels and adapt to efficient energy use step by step.

In agriculture we have to adapt to further intensive cropping patterns, for a substantial portion of cropland will be lost under the climate impact, and we have to undergo a massive rehabilitation programme as well. We have also to undertake an extensive campaign to aware people about the climate change -- how and why it happens, and enlighten them of the necessity for mitigation and adaptation measures. This is also necessary for involving the people in the process. Because, all inclusive the task is simply huge; not feasible for administration machinery or a few agencies to shoulder it alone.

Besides, or outside of, government, NGOs have a proven record of undertaking and accomplishing large public interest projects involving individuals as well as communities. The sphere includes healthcare, education, water and sanitation, afforestation, farming, microcredit and poverty alleviation. They can be effectively engaged in alleviating climate change suffering of the people as well utilising their experience and capability. Small industries also can come under some NGOs' SME programmes for employment and rehabilitation of the displaced.

Poor countries' cry for help is by all counts justified. The poor obviously suffer most during any calamity not to speak of the climate change impact -- the calamity of scale. The NGOs have experience of working with and for the poor in some cases more than government agencies themselves. They have experience of involving their network during emergency situations, like flood and cyclone, in relief and rehabilitation service.

Government can chalk out programmes for the poor and vulnerable according to evolving situation or ask NGOs to submit theirs and get approved. Then it can embark upon that at local government level or whatever with NGOs, or ask them to run theirs under its supervision or whatever process plausible. The objective is to serve most the most vulnerable -- the poor -- to help them mitigate and adapt to the climate change situation. This has to be accomplished in whatever way and with whatever means possible.

--Shariful Alam Sharif

Thursday, October 14, 2010

Biodiversity for life and livelihood


Human being is probably the most intelligent among the million species. He has tamed the nature by his knowledge and comparative physical advantages. However, in his reckless consumption spree for the sake of development and prosperity, humans have used different species in such a way that many of those have already become extinct and some others are under threat of extinction.

At present, humans have intensified use and production of some so-called economically valuable species ignoring others' contribution. Lately, humans have started to understand significance of ecosystem services generated by different species and estimated that 60% of the ecosystem services, accessed, are in decline due to unsustainable human actions (MA, 2005). Millennium Ecosystem Assessment warned that the cost of failure to halt biodiversity loss on land alone in last 10 years is estimated to be $ 500 billion and if the current trend of biodiversity loss continues then in near future the humanity itself will face extinction. 

Therefore, the realisation of a balanced world with all living beings' 
respective role has come to the forefront of the recent scientific researches. The UN has supported the awareness by declaring 2010 as International Year of Biodiversity. The United Nations Environment Programme (UNEP) has further added value to the recent worldwide movement of conserving biodiversity by setting this year's World Environment Day theme as “ Many species. One planet. One future”.

Bangladesh is endowed with very rich biodiversity resources and it is evident from its species diversity profile, particularly for angiosperms and avi-fauna. Recently published 4th National Biodiversity Report estimates that the country possesses 3,611 species of angiosperm, 2,623 belonging to 158 families of dicotyledons and, 988 to 41 families of monocotyledons. Since the country's economy is largely natural resources based, the sheer majority of the human population directly depend on its biological resources to sustain their lives and livelihoods. 

However, country's overwhelming population and their demand for development often compel them to pay little or no heed to biodiversity. Industrial development, expansion of agriculture, human settlements, unplanned urbanisation and rural infrastructure development all have exerted negative pressure on our environment, particularly resulting in the destruction of habitats of valuable biodiversity resources. 

Climatic change, not completely a new phenomenon but recently soared up in policy arena, is another strong factor apprehended responsible for biodiversity loss. Climate change and biodiversity exhibits an inverse relationship. Loss of biodiversity causes climate change; on the other hand, climate change induced natural calamities contribute to biodiversity loss. Bangladesh, supposedly a darling child of nature, is affected from both climate change and poverty. Consequently, its biological resources experience immense pressure; rather than being considered as natural capital, the resources are always regarded as raw materials. 

Agriculture is the world's oldest occupation and constitutes the biggest employment sector. Both basic sustenance (nutrients and calories) for people and raw materials for industries have been coming from agriculture since inception of civilization. Yet, agriculture is fundamentally dependent on biodiversity and eco-system services. Species of crops and livestock and their genetic diversity are the basis of agriculture. Even the insects contribute a lot to the agro-production. Species of earthworms, fungi, soil-micro organisms, as well as flora and fauna surrounding agricultural areas underpin ecosystem services that sustain agriculture, such as pollination and nutrient cycling.

Being an agrarian country, life and economy of Bangladesh are largely dependent on agriculture. In spite of introduction of mechanical agriculture, still larger farmer community practices nature dependent agriculture where they use bull to cultivate their land, earthworm as their plough, cow dung, small trees and leaves as their manure, insects as their agent of pollination and so forth. Every component of the natural environment works as their helping agent in agricultural production. Even if so-called green revolution has been given credit for alleviating poverty and providing food to the country's large population , but recent food crisis has depicted an opposing scenario where mechanised agriculture, which pay little attention to biodiversity, has been blamed for degrading environmental quality and consequently the production decline. 

Intensified production system using only few varities, dominates the current agriculture production system. Even though presence of more than 10,000 rice varieties in the country is a clear example of our vast wealth of genetic resources, but now there are only ten types of local rice in production practice and this sector has been dominated by High Yielding Varieties (HYV) which need an intensive use of fertilizers, insecticides and so on resulting in an adverse impact on the surrounding environment. Once abundant, fish resources might be the most affected by synthetic agri input.

Together with the staple rice small amounts of vegetable and fish constitute the everyday diet of overwhelming majority population of Bangladesh. Moreover, fisheries are important occupation of many of the rural poor, constituting main income source for near about 2 million households. Flood plains, rivers, streams, canals, beels and ponds in Bangladesh are equipped with 260 species of fresh water fish resources. Among them, 140 species are classified as small indigenous fish species. Moreover, a considerable number of estuarine and marine fish species have enriched country's fish resource stocks. However, overcatch, destruction of habitat, pollution, conversion of wetlands to alternative uses have resulted in extinction of many fish species and subsequent wild catch has declined sharply in recent years. 

The extinction of local fish species and associated decreased production has affected poor people's diet mostly. Millions of poor rural people are now suffering from malnutrition, who once were dependent on fish to meet their protein demand. Interestingly, official statistics estimate that total fish production has been increasing; this is due to aquaculture practice with some fast growing hybrid and exotic fish species. Regrettably, many of the widely cultivated exotic fish species have been identified as invasive and they exert negative externalities to our local ecosystem. Moreover, poor people have limited or no access to such commercial fish culture. And they cannot afford fish from the market due to high prices. Many of the rural poor cannot even remember now when they had fish last time.

Forests provide food and vast array of materials for medicinal, cultural and spiritual purposes as well as building materials and firewood, more specifically the poor is the primary beneficiary from the forest. It is estimated that one billion people worldwide depend on drugs derived from forest plants. Moreover, by providing home to a large number of birds and wildlife forests play an important role to conserve valuable biodiversity resources. Forests' ecological, social and economic functions are also praiseworthy. Forests store and purify drinking water, protect watershed, mitigate natural disasters, and control erosion, cycle nutrients, help to store carbon and to regulate climate and contribute to the regional and national economies both directly through revenues, value adding and employment. 

Even if Bangladesh is a forest poor country, only 6% of country's total land is forest covered, yet it is very rich in species diversity. The hill forest alone supports 2,259 species of angiosperm. Sundarbans, world's largest single mangrove block and a world heritage site, is a unique habitat of spectacular Royal Bengal Tiger. Being the most bio-diverse forest in Bangladesh, Sundarbans alone supports 53% of birds, 43% of animals, 42% of reptiles, 36% of amphibians, 29% of plants and 17% of fish species of the country's total biodiversity resources.

However, Bangladesh's forests have decreased significantly in terms of both area and quality over the last few decades. The annual deforestation rate is estimated to be around 3.3% (Khan et al. 2004). Number of factors are responsible for forest degradation. The increasing population and associated increased demand for timber, shelter, food continues to put pressure on existing forest resources resulting in over exploitations. Moreover, introduction of some exotic species such as Eucalyptus, Acacia etc. and their wide plantation is another important cause of some native species' extinction. These exotic species neither fitted with local environment nor support birds or any wildlife. Additionally, these have introduced some pests, which incur a huge loss every year. 

Every year about 20% new settlements are being added at the expense of productive homestead agriculture and forest lands, which basically used to provide food and livelihood to the rural poor. Homestead ecosystem is also very important for providing shelter to wildlife. With dwindling forest cover, this importance is becoming far more significant. Most of the small mammals and birds still existing in the country are completely dependent on this ecosystem, including agricultural land for their survival.

Again, culture and biological diversity are closely intertwined. Biodiversity remains at the centre of many religions and culture. The close association between biodiversity and culture is particularly apparent at sacred sites -- areas which are held to be of importance because of their religious and spiritual significance. In Bangladesh, there is a significant diversity in ecosystem, culture, especially rural and indigenous culture, which is the centre of attraction to many tourists. 

We do not have another planet to depend on, except this mother earth. The earth is still livable and beautiful because it has many species, who perform different functions to keep the earth functioning. All the species have been created for serving and supporting human beings as argued by many religions. Biodiversity loss, therefore, will eventually lead to human extinction. We have to protect all the species for our own sake, for keeping the world colourful and, above all, surviving. 

Shariful Alam

Wednesday, October 6, 2010

The seven stages of working life

YOUR work and your personal achievements remain a major focus these days, or so the contents of my mailbag suggest, so let's return to that subject.

William Shakespeare said that a person went through "seven ages of life."

I think the immortal bard was spot on.
 

Here are The Seven Stages of Working Life. Which stage are you at?
 

Stage One: The intern
Arrives late. Explains that he got lost. Told to make coffee. Makes undrinkable black gunge. Sits in on meetings at which he realises, with horror, that he knows nothing about anything being discussed. Spends most of the day feeling terrifyingly useless. Asks inane questions such as: "Please, sir, do we have to ask before we go to the toilet?" At midday, eats packed lunch from home.
 

Stage two: The short-contract worker
Arrives early. Waits outside till a staff member arrives with a key. Devotes all his energy to volunteering for assignments because he is desperate to get hired full-time. At lunch, he eats sandwiches at his desk while doing everyone else's work. He leaves the office last, at 9:00 pm, but still arrives the next morning before the rest of us.
 

Stage three: The new hire
Arrives slightly before other staff. First to take his seat at meetings. Talks constantly about "our vision." Starry-eyed and enthusiastic. Does much of the work that gets done, although he is constantly interrupted by older staff wandering into his room to sit on his desk and spout rubbish. Leaves at 8:00 pm.

Stage four: The experienced executive
Arrives at exactly 9:00 am, not a minute early or late. Has a lot of work to do, but spends most of his time transferring it to other people. Occasionally buys lunch at the wine bar for people at stages one, two and three, because he enjoys the way they worship him. Leaves at 7:00 pm.

Stage five: The senior manager
Strolls into the office at 9:40. Cannot avoid work completely, but does the bare minimum. Lunches at private club, practicing his "vice president" look of worldliness and ennui so as to be ready for the next stage. Sneaks out of the office on the dot of 6:00 pm.

Stage six: Vice president
Languidly ambles into the office around 11:00. Finds work a total bore, so he gets people at stages one, two, three and four to do all of his work for him. Spends most of the day sitting on the desks of new hires to give them the benefits of his wisdom. Leaves the office at 5:00 pm pretending to be on the way to a client meeting.

Stage seven: Chairman
Arrives late. Explains that he got lost because his memory is not what it was. Serves coffee from private percolator. Turns out to be undrinkable black gunge. Sits in on meetings at which he realises, with horror, that he no longer knows anything about what is being discussed. Spends most of the day feeling terrifyingly useless. Asks inane questions all the time, such as: "Shall we open some overseas offices, or have we already done that sort of thing?" Before leaving at 3:00 pm, he eats packed lunch from home because he can't eat anything without bran.
 

It's the circle of life.

By the way, every time you start a new job, you usually go back several stages. For example, I'm a young man, but I am at Stage Five in my current job. What stage are you at?

Shariful Alam

Sunday, September 19, 2010

Water pollution

Pollution affects plants and organisms living in water. Although water has been identified on several planets, none has as much water as Earth, of which 70 percent is covered with water. Approximately 97.4 percent of the water on Earth is found in oceans and is too salty for human consumption. An additional 2.6 percent is fresh water found in underground bodies of water called aquifers or frozen in glaciers or polar ice caps. Less than 0.02 percent of Earth's water is present in lakes, rivers, or the atmosphere. The water itself provides the environment for fish, plants and animals. There are several sources of water pollution which work together to reduce overall river water quality. Industries and agriculture discharge liquid waste products. Rain as it falls through the air, or drains from urban areas and farmland, absorb contaminants.

Many dangerous metals including iron, aluminum, tin, lead, mercury and cadmium come out of old mine workings. Phosphorus from sewage is another powerful pollutant. Careless people can also pollute rivers and harm wildlife by pouring things like used car oil and paint into drains. Rubbish dumps create a strong chemical cocktail called leachate. This can be deadly to fish, small aquatic creatures and plants. In modern waste sites great care is taken to ensure that none escapes, but leachate from older rubbish dumps seeps into rivers and can pollute our drinking water. If we want to mitigate water pollution then we need to be aware of using various technologies. In the industrial sector, there should be use of water purification technology such as waste water treatment plant. This way we can maintain a sound industrial environment. Steps should be taken by the government at the policy making level. The awareness among the general people of the country and the NGOs should help to reduce water pollution.

Shariful Alam